ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ডাবের পানি খেলে কী হয় কী হয় না  

প্রকাশিত : ২২:৩৯, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১৭:৫২, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

এই গরমের সময় তৃষ্ণা মেটাতে আমরা নানা ধরনের পানীয় পান করে থাকি। কিন্তু সেগুলো শরীরের কতখানি উপকার বা অপকার করছে তা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই। এমন পরিস্থিতিতে ডাবের পানি খুবই উপকারী। এটি কোনো কৃত্রিম পানীয় নয়। শরীর থেকে যেসব লবণ গরমের কারণে বের হয়ে যায় তা পূরণ করার জন্য আমাদের খাদ্য তালিকায় নানা ধরনের ফলের সরবত, কোমল পানীয়র পাশাপাশি ডাবের পানি রাখা যায়।    

ডাবের পানি শুধু পানীয় হিসেবেই উপকারী তা নয়, ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ ও নানা রকম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, যা অনেক জটিল রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।

ডাবের পানি এশীয় দেশগুলোতে বেশ জনপ্রিয়। গরমে পিপাসা মেটাতে ও শক্তিদায়ক হিসেবে ডাবের পানি চমৎকার। তবে এটি নিয়ে নানা মিথও চালু রয়েছে। আসুন জেনে নিই এগুলো কতটা সত্য।

ডাবের পানিতে অনেক শক্তি?

পানিশুন্যতা দূর করে

ডাবের পানি দ্রুত পানিশুন্যতা দূর করে বলে পান করার পর বেশ ঝরঝরে লাগে এটা ঠিক, কিন্তু এতে ক্যালরি বা শক্তি যে খুব বেশি রয়েছে, তা নয়। ১০০ মিলিলিটার ডাবের পানিতে চিনি বা শর্করা আছে ২ দশমিক ৭ মিলিগ্রামের মতো, যা দোকানের বিভিন্ন জুস, ড্রিংকস বা কোমলপানীয়র চেয়ে অনেক কম। বাজারচলতি পানীয়র তুলনায় এতে ক্যালরির পরিমাণও কম। একে লো ক্যালরি ড্রিংকস বলা যায়। তাই ডাবের পানিতে অনেক শক্তি মিলবে, এটা ঠিক নয়। তবে এর শর্করার প্রায় পুরোটাই সহজ শর্করা, মানে দ্রুত রক্তে মিশে যেতে সক্ষম।

ডাবে অনেক পটাশিয়াম  

এটা ঠিক যে ডাবের পানিতে পটাশিয়াম আছে। কিডনি রোগীদের ডাবের পানি কম খেতে বলা হয়। কিন্তু এর চেয়ে বেশি পটাশিয়াম আছে এমন খাবার কিন্তু তাঁরা দিব্যি খেয়ে ফেলেন। ১০০ মিলিলিটার ডাবের পানিতে পটাশিয়ামের পরিমাণ ১৮৫ মিলিগ্রাম। ওদিকে একটা কলায় ৪২২ মিলিগ্রাম, একটা আলুতে ৭১৫ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম রয়েছে। পটাশিয়াম কমলা ও টমেটোতেও কম নেই। তাই পটাশিয়ামের বিধিনিষেধ থাকলে ওগুলোর কথাও মাথায় রাখুন।

উচ্চরক্তচাপের রোগীর মানা

ডাবের পানিতে লবণ ও খনিজ আছে, অনেকটা স্যালাইনের মতো। তাই পান করলে রক্তচাপ বাড়বে, এমন ধারণাও আছে। এটা ঠিক নয়। কেননা ডাবের পানির লবণ মূলত পটাশিয়াম, সোডিয়াম নয়। আর পটাশিয়াম রক্তনালি প্রসারিত করে, বরং রক্তচাপ কমাতেই সাহায্য করে। সোডিয়াম উল্টোটা করে। তাই উচ্চরক্তচাপের রোগীর ডাবের পানি পান করতে মানা নেই।

ডাবের পানিতে ওজন কমে

বাজারচলতি জুস ও ড্রিংকসের তুলনায় ডাবের পানির ক্যালরি কম, এটা সত্য, তাই বলে এটা একেবারে পানির মতো ক্যালরিমুক্ত, চিনিমুক্ত পানীয় নয়। তাই ওজন কমাবে, এমন ধারণার কোনো ভিত্তি নেই।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে

ডাবের পানি কলেরা প্রতিরোধ করে, বদহজম দূর করে, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, গরমে ডি-হাইড্রেশনের সমস্যায় বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ব্যায়ামের পর যখন শরীর ঘেমে ক্লান্ত হয়ে যায় তখন ডাবের পানি পান করলে শরীরের ফ্লুইডের ভারসাম্য বজায় থাকে। গরমের কারণে ঘামাচি, ত্বক পুড়ে গেলে ডাবের পানি লাগালে আরাম পাওয়া যায়।

শরীর সুস্থ রাখে

ডায়াবেটিস রোগীরা ডাবের পানি পান করতে পারে। ডাবের পানি বাচ্চাদের গ্রোথ বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীরে ব্লাড সার্কুলেশন ভালো রাখে। এ ছাড়া কোলাইটিস, আলসার, গ্যাসট্রিক, পাইলস, ডিসেন্ট্রি ও কিডনিতে পাথরসহ এসব সমস্যায় ডাবের পানি খুবই উপকারী। ঘন ঘন বমি হলে ডাবের পানি ওষুধ হিসেবে কাজ করে।

তাই কৃত্রিম ক্ষতিকর পানীয়র পরিবর্তে ডাবের পানি পান করার অভ্যাস করতে হবে। এতে গরমে তৃষ্ণাও মিটবে, শরীরও সুস্থ ও তাজা থাকে।

আআ/এসি   
   


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি